এবার কয়েক দিন ধরে গণমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি খবর। বাংলাদেশে আর ফিরছেন না হাথুরু! এমন খবরে গুঞ্জনের ডালপালা মেলা শুরু হয়েছে। সব মহলে এখন এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শ্রীলঙ্কা ছাড়া বড় কোনো দলের হেড কোচের দায়িত্বে তিনি কখনোই ছিলেন না।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ও ফ্র্যাঞ্চাইজি দল সিডনি থান্ডার্ডসের সহকারীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোচ। ক্রিকেট বিশ্বে এর বাইরে তার নেই কোচিং অভিজ্ঞতা। এমন একজন কোচ বিসিবির পছন্দের তালিকায় কিভাবে শীর্ষে থাকেন, তা নিয়ে নানান মহলে বিভিন্ন সময় উঠেছে নানান প্রশ্ন।
এদিকে নিজের ক্রিকেট কোচিংয়ের দক্ষতা দেখিয়ে যত না আলোচনায় ছিলেন চণ্ডিকা, তার চেয়ে বেশিবার তিনি সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন মাঠের বাইরের নানান ঘটনায়। দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে তার আগমনের খবরে উঠেছিল বিভিন্ন প্রশ্ন। কেন বিতর্কিত এই হাথুরুকে বিশাল অঙ্কের ডলার দিয়ে আবারও ডেকে আনা হচ্ছে বাংলাদেশে!
আর সেই সময়টাতে বিসিবির ছিল নানান যুক্তি। তবে সেসব যুক্তির বাস্তবতা নিয়ে আছে নানান প্রশ্ন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবি আর মাঠের বাইরে হাথুরুর নানান কর্মকাণ্ড বিতর্কের পালে নতুন হাওয়া দিচ্ছিল। বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে হাথুরুকে নিয়ে কি উল্লেখ আছে, সেটি বিসিবি স্পষ্ট করে না জানালেও গুঞ্জন আছে কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার আর দূরত্ব দিনে দিনে বাড়িয়েছেন হাথুরু।
এদিকে সেসব গুঞ্জনের সত্যতা এতদিন না পাওয়া গেলেও এবার সে বিতর্কে নতুন করে আগুন জ্বালালেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক ও বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের টিম লিডার খালেদ মাহমুদ সুজন। গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমাধান না! জাতীয় দলের কোনো বিষয়ে তার আগ্রহ নেই। এমনকি বিশ্বকাপে তিনি যে রোল প্লে করেছেন, সেটা তার সঙ্গে যায় না। বিশ্বকাপে তিনি সম্মান পাননি বলেও মন্তব্য করেছেন।
এসবের পেছনে তার অভিযোগের আঙ্গুল হাথুরুর দিকে। গণমাধ্যমে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে সুজন স্পষ্ট বলেছেন, ‘কোচিং স্টাফরা কে কি বলেছে, তা সবাই জানে। একজন মানুষের সঙ্গে সবার সম্পর্ক খারাপ হতে পারে না’। সুজনের এমন মন্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়, দলে একনায়কতন্ত্র চালিয়েছেন হাথুরু। ইচ্ছে মত দলকে নিজের মতো পরিচালনা করেছেন এই কোচ। যা কি না দলের জন্য বয়ে এনেছে দুর্যোগ!
এদিকে চট্টগ্রামে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগেই অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন হাথুরু। বিসিবির পক্ষ থেকে পারিবারিক কারণ উল্লেখ করা হলেও নেপথ্যে ভিন্ন গুঞ্জন। বিসিবির সঙ্গে দূরত্ব আর কোচের খবরদারি নিয়ন্ত্রণে বোর্ডের নানান পদক্ষেপ ভালোভাবে নেয়নি হাথুরুসিংহে। দলের সঙ্গে তার সম্পর্ক কতোটা খারাপ, তা খালেদ মাহমুদ সুজনের সেই সাক্ষাৎকার দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। তবে কি বাংলাদেশে শেষ হতে চলেছে হাথুরুর দ্বিতীয় অধ্যায়!